Author Picture

কামরুল আলম সিদ্দিকী’র তিনটি কবিতা

কামরুল আলম সিদ্দিকী

জন্মদিনে

আর একটা জন্মবার
নিমবনের নির্বিকার একফোঁটা ঊষের মতো
হারিয়ে গেলো!

কোথাও নিমফুল ফুটলে বনের কুষ্ঠিতে
কোনো তোতাপাখি কি লিখে রাখো!

বসন্ত যাপনের প্রস্তুতি নিতে না নিতেই শীতকাল কাছে এলো,

আহারে আমি খুব শীতকাতর,
জানবো না শেষাবধি
কে জানি আমার পানি ফুটিয়ে দিলো!

বরাবরই মাটির ঘর আমার খুব প্রিয়,
মাথার উপর সারল্যে শুয়ে শুয়ে আগলে রাখা
শান্ত বাঁশের ছাউনিও আমার এক প্রিয়তম!

মাটি খুঁড়ে , বাঁশ কেটে যে আমার ওরকম
আশ্রম দিলো,
তাঁকে আমি কী দিবো?

মৃত্যুবার বসন্ত হলে নতুন পাতা গজাবে নিশ্চয়ই,
তার মধ্যে যে শীতপাতাটি ঝরে পরবে
তাকে তোমরা কোন ঋতুতে রেখে আসবে—

বসন্ত না শীতে?

জানোতো আমি খুব শীতকাতর,
আমারে জায়গা দিও এক চিলতে বসন্তের ভিতর!

 

জীবন

জন্মবার আমাকে তোমার
বড়ই ফুলের নাকফুল ছোঁয়াতে বলে,

মৃত্যুবার আমাকে বড়ই পাতার
কোমল-গরম পানি ছোঁয়াতে বলে,

জীবন আমাকে রৌদ্রবেলার
সুখচিলের মতো আকাশ উড়াতে বলে,

তার মাঝখানে এই সান্ধ্য জীবনের
হ্যারিকেন নিভে আর জ্বলে!

নাছোড় শিশু আমাকে তার মাটিতে পুতে রাখা
ডাকবাক্সে পুরোদমে ঢুকে যেতে বলে;

তারপর মেঘনাপাড় আমার হাড়ের জৈবসারে
কবরখানার বুনোফুল ফোটাতে বলে!

 

আন্ধারমানিকে একদিন

আন্ধারমানিকে আছো বসে ভাদর গাদল দিন,
প্রত্নমানিক হতে চেয়েছো, ভগ্ন কানাই সেদিন!
অথচ একদা বাসি হবে, ভালো বা মন্দ কোথাও—
রাত্রি বা দিনের মধ্যে হবে, নির্বাসিত একদিন!

আরো পড়তে পারেন

বেওয়ারিশ প্রেমের কবিতা

১. জীবনকে বিজ্ঞাপনের মতো সেঁটে দিয়ে দেখেছি, আমাকে গ্রহণ করেনা কেউ। আমাকে ভালোবাসে না ঘুমগন্ধওয়ালা সকাল— আমাকে ভালোবাসে না বাজারের জনবহুল রোদ, আমাকে ভালোবাসে না কেউ, ভিক্ষুক, শ্রমিক, চাষী আমাকে ভালোবাসে না, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে ভালোবাসে না, শোষক কিংবা শোষিত, শাসক ও প্রজা কেউই ভালোবাসে না, আমাকে ভালোবাসে না তরুণ-তরুণী-বৃদ্ধ বা যুবা, পার্থিব কোনো….

আজাদুর রহমান-এর একগুচ্ছ কবিতা

সহজাত মানুষ তোমাকে অবহেলা করবে যে কোন দিন যে কোন সন্ধ্যায় তুমি কল্পনাও করতে পারবে না এমন ঘোরতর বর্ষার দূপুরে মানুষ তোমাকে অবহেলা করবে। পথের পাশে ওত পেতে থাকা শিকারির মত সন্তর্পনে উঠে আসা মানুষ পায়ে পা ঘষে তোমাকে অবহেলা করবে। কোথাও না কোথাও কোন এক বয়সে কোনও না কোনও ভাবে মানুষ তোমাকে অবহেলা করবে।….

হোসনে আরা শাপলা’র একগুচ্ছ কবিতা

আলতু ব্যথা কোন এক শুভ্র সময় আমাদেরও ছিল পাশাপাশি-মুখোমুখি বসে থাকা শুধু হিসেব-নিকেশ, দাবি-দাওয়া, চাওয়া-পাওয়া এসবের বালাই ছিলো না কোন শুধু কানায় কানায় পূর্ণ ছিলো ভালোবাসা। চোখের তারায় ডুবে গিয়ে অন্বেষণ শুধু শত জনমের সুখ। ওইসব স্বপ্নমাখা দিন কোন দরজা দিয়ে পালিয়ে গেল কোথায় তারই জন্য মনের মধ্যে কেমন আলতু ব্যথা।   তৃপ্তি ভরসার হাত….

error: Content is protected !!