
তোমার জন্য রাখছি তুলে
.
তোমার জন্য রাখছি তুলে আমার চোখের রক্ততারা ফুল।
হয় যদিবা দেখা আমার, রেখো তোমার, বুকের ফোটা দু’কূল।
তোমার সাথে দেখা হলেই বৃষ্টি হতো অমন খরার দিনে…
মেঘেরা সব আসতো ফিরে, আসতো ফিরে উজান ঠেলে মীনে।
আগুন ফুটে ফাগুন হতো, দোঁআশ দেশে বাণ ডাকতো জলে।
দোঁআশ ফুলের মেয়ে তুমি, তোমায় দেখে আকাশ যেতো গ’লে।
তোমার জন্য রাখছি তুলে আমার চোখের রক্ততারা ফুল।
হয় যদিবা দেখা আবার, আমায় দিও তোমার ফোটা দু’কূল।
উজায়া মাছ
.
উজায়া মাছে ঠাডা পড়লেও উজায়,
পাখাওয়ালা উই কেন যে আগুনে ঝাপায়!
উজবুক উজাতে উজাতে শোল-গজার-কৈয়া ঝাঁকে
ঝড়-বৃষ্টি-বজ্র-মহামারী কালেও সে উজায়।
এখনই উজানের কাল, কালবৈশাখ মাস!
বং তুমি উজাও…
হাটে ঘাটে দোকানে ত্রানের ভাণ্ডারে
দখল নিয়ে উজাও!
জ্যৈষ্ঠের বজ্র থাক, মহামারী থাক!
উজানের কালে—
তুমি আসলে অমাবস্যার ভূত হয়ে যাও!
তুমি
.
বাদ আসর বাদ মেঘে
আমগাছের রোদ পড়ে তোমার মুখে,
প্রকৃতি দেখতে এখন তোমারই চোখ চোখ লাগে।
তোমার ঘরে আকাশ ঢুকেছে,
তুমি আসমানী আগে কেউ বলেনি;
তোমার ঘরে বাতাস ঢুকেছে,
তোমার চুলে ওদের বাসা আগে কখনো রাখতে পারোনি।
আগে তোমার বুকে শ্বাপদের পাহাড় ঢুকে থাকতো,
দু’টো নীল পাখি রাখতে তোমার খুব কষ্ট হতো,
পাল ছিঁড়ে আস্ত নাও
মেঘনার ঘূর্ণায় ভয়ঙ্কর ঢুকতে থাকলেও
তোমাকে হা হা করে হাসতে হতো।
কসকিধর পাতালে ঘুমুচ্ছে ভয়ে,
তুমিতো ভালো আছো আজ নদের বাড়িতে।
কভিডের দিনগুলো তোমাকে কিছুটা ফুরসত দিলেও
করোনাতো চিবুচ্ছে পৃথিবীর বুকে
সে কানাতো আর আপদের বৃশ্চিক দেখেনা,
যা সামনে পায় তাকেই কামড়ায়।
তোমাদের অভিশাপেই অন্তত ঘরে আছে জাগুয়ার।
আসা-যাওয়া
.
আকাশ দেখতে দেখতে ভুলে গেছি
যাওয়ার কথা।
অচেনা আঁধার থেকে কবে যে নেমেছি সাঁতারে
পুতুলির মেলা।
মনে নেই কবে সেই আসা;
পথ তবু বসে আছে ক্লান্তিহীন রথে—
কোথা সে নেয়ার কথা,
যে পথে যাবো ফের অচেনা হাটের ডাকে—
মাঝি ঠায় বসে আছে নিরাকার, নৈঃশব্দের ঘাটে;
যাবো কোন গাঁয়?
শুন্যতায় ?
আছো কেউ মাঝি?
কেউ নেই?
এই আসা যাওয়ার পারাপারে—
তবু আসি তবু যাই— মেলা ভেঙে, দল ভেঙে
একা নদী পার হয়ে!