
পুনরায় হোঁচট
বন্যহাতির আঘাতের মতো তছনছ করো সুখের পোয়াতি ক্ষেত
আমার মনের জমিন চৌচির, স্বস্তি হারিয়ে অস্থির, দুঃখগুলো—
জমাট হয়ে আঘাতে আঘাতে জীবনের করে অপচয়। নিঃশব্দ
ধ্যানের উপযোগী গুহার মতো মন, মাঝরাতে কেঁপে উঠা
স্বামীহীন যুবতীর মতো
নি:সঙ্গ চাঁদ
মেঘের দাপট
আমি একা বসে অবসরপ্রাপ্ত উড়োজান আর লোহার কঙ্কাল!
আঁধারের চাদরে ঢাকা তোমার স্বাস্থ্যবতী দেহ
জোনাকি পড়লে চোখে ভাবো—প্রদীপ হাত।
সূর্যের উদারতা ভুলে তুমি উদাসিন আলোর জাহাজে কাঁচ।
তাই আমার অন্ধকার চাষ। তুমি পোস্টারে আঁকা রঙিন বিজ্ঞাপন।
ঘড়িঠোঁট সিলেবাসে জীবনের পাঠ
দেখা হয় না রাতের! ফলে— পাড়ায় বসে না সেই বাউলার মেলা
বলে না চাঁদ-তারার সঙ্গে বসে, শোনাও কবিতা—কথামালা—সুর।
বলেছিলে—অক্ষর ভালোবেসে আকাশ ছুঁয়ে যাও। আমি ছবি আঁকি।
মন থেকে মনে অচেনাকে হয় না চেনা, মুখ ও ছবির পার্থক্য খুঁজি!
পাখির কালের ডানা মেলে বহুদূর…ভুলিনি, দিনের একফালি চাঁদ।
যদি কথা হয় তারা ছাড়া কোনো রাতে, রাজপথে অথবা চায়ের—
কাপে। ঘড়িঠোঁট সিলেবাসে জীবনের পাঠ, মনের ব্যথায় ছেপেছি—
যে ছায়া অনায়াসে তুলে নেবে তা, পৃথিবীর যাবতীয় নীরবতা—রব?
বিক্রিত কাপুরুষ
অমাবস্যামেঘ—বিজলি চমকে শঙ্কিত! চুপচাপ বন্দি পাখি
সোনার খাঁচা, আগে ছিলাম এমন? আহা! ছিল দুঃসাহস।
মনিবদৃষ্টি—মিষ্টি ইশারায় টিপ, ফণায় ভরা বিষে বিষ…!
স্বাভাবিক হতে পারি না— বজ্রভয়ে বোবা। আমাকে আঁকি
স্বাধীনকণ্ঠ আজ শোকের কাফন…অট্টহাসি লুটেরার ঠোঁট।
ধ্বংস খেলায় পরমাণু প্রাণী! জলাভূমি দলে বহুমূখি হাতি
সুন্দরী বন উজাড়, ছাড়াবাড়ির পেঁচা যেনো রাজার রাজা
চুপচাপ দেখে যাই খুঁটিহীন আকাশ যেনো আয়নামানব।
সাক্ষী আমি পৃথিবীর ভাই একা-বোকা বিক্রিত কাপুরুষ।
মানচিত্র
মিডিয়া দেবীকে দেখেছি প্রথম, কুশল নয়নে তার লাঘবের ছলা
লোভে লাল কি এমন বিকাশের নেশা, নেকাবেও নিশিরাত,
রোদে পোড়া দিন। এপাড়ে—ওপাড়ে জমে এফএম পাড়া—ওপাড়া
গোহারা বোন আহা! মায়াবী খাতুন নিগূঢ় ঠোঁটে তার রহস্যের গান।
কার ধ্যানে মাছরাঙা ফেরার আশায়
পথেঘাটে ওড়াউড়ি মাজার—বাজার।
আকাশে—বাতাসে ধ্বনি নীল পরিডানা মৌসুমি মহুয়া কূপে এক
নেপথ্য ঘুমায়, হাওয়ায় উধাও দিন, রাত বেজে যায়…পাতার
শরীর পচে হাড়গুলো প্রতিদিন তবু দেখো বাঘকে মানচিত্রে সাজায়!
মন
মন ভালো নেই দূর্বাঘাসের শিশিরে গোসল
জলবতীর জল ঢেলেছি বৃক্ষশীতল মায়ায়
সূর্য কিশোর ভিটামিনে ডায়াবেটিস দূর
তবু ক্ষতের ঠিকানাও পাইনি কোনো পথে।
আগুন লাগা আলোয় পোড়ে অস্থিরতার ঘর
সুখের নেশায় পথের পাড়ায় অতি তুফান—ঢেউ
নদীর পথে একলা নদী, আমি অসুখ মনে—
খুঁজে ফিরি কাননবালার মন ভালো নেই! মন?
মনদেয়ালে ঘুণপোকারা করছে ক্ষত সুখ!
না দেখা সব গোপন বিপদ পাঠায় কলরব
বোকার মতো অতীতপাপে দিশহারানো রোদ
পায় না মনের ঠাঁই—ঠিকানা মনে কিসের দুখ?
আঙুলে রিঙ আঙুল রেখে পায়ে রেখে পা
চলো ঘুরে যাই পাই বা না পাই তবু আশা
ভালোবাসা পৃথিবীকে ঘাস—বাগিচা বানাই
আকাশটাকে বানাই রঙিন ছাতা।
অপেক্ষা
সূর্যকিশোর পা, মাটিতে শিশির
অটল হাসি বুঝি ভাঙে যুবতিঘুম
হেসে মৌরানি পাঠায় সেপাই—
কে পা’য় ফুলসম্ভ্রম করছে বিলীন!
চোখ তার খোঁজে কৃতি স্বরূপ
সুখ ঢেলে দেয় পাতায় পাতায়
কিভাবে নীরব বাঘিনী রানি
ছেড়ে যাওয়া দ্যাখে, দ্যাখে
সোনার সংসার যায়
নির্বাসনে…
দেয়াল
নড়ে ওঠে মুখে যার কামান কোরাস
সে মুখে আবার শান্তির ফুল
ভুল কিনা ঠিকঠাক—
কিছুই বুঝি না, ভুল হয়ে যায়।
দেয়ালে ছলনা ঘড়ি
দোলে প্রভু পৃথিবী সকল
পাশে একা আমি…
ওপাশে দেয়াল।