
রাজনৈতিক প্রেসক্রিপশন ছাপিয়ে গিয়েছে ব্যালট পেপারকে। ক্ষমতার পেছনের দরজায় এন্ট্রি লেখা বোর্ড নিয়ে দাড়িয়ে আছে জলপাই রঙের উর্দিধারীরা। ফর্দ লিখে জানিয়ে দিচ্ছে, হোয়াট টু ডু অ্যান্ড হোয়াট নট টু ডু। যেটা জনগণের মুক্তির রাস্তায় জ্বালিয়ে রেখেছে অগণিত লাল বাতি। আর মধ্যবিত্তের ঘিসাপিটা জীবনে বরফ যুগ দির্ঘায়ীত করছে। পাকিস্তানের যে জেনারেশন নিজেদের আকাঙ্ক্ষা থেকে মুক্তিকে বাদ দেয়নি কখনও তারাই খুঁজে নিল ‘লায়ন অব লাহোর’-কে। খেলার মাঠ থেকে রাজনীতির মাঠ– পাকিস্তানে তিনি জনপ্রিয়তায় ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। ক্যাপ্টেন, প্লেবয়, জনহিতৈষী, রাজনীতিবিদ, প্রধানমন্ত্রী– বিভিন্ন রূপে ধরা দেওয়া ইমরান খান নিয়াজীকে আপনি কি হিসেবে মনে রাখবেন সেটা আপনার ব্যপার। তবে আমরা আজ এই মানুষটির কয়েকটি অবতার পরিক্রমের চেষ্টা করব।
এই গল্পের শুরু ১৯৫২ সালের অক্টোবরে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছর পর। ইমরান খান লাহোরের একটি উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মের সঠিক তারিখ নিয়ে রয়েছে রহস্য। তাঁর পিতা ইকরাম উল্লাহ নিয়াজী ছিলেন একজন জাতিগত পশতুন। ব্রিটিশ রাজত্বের সময় তিনি স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করেছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি পাকিস্তানের গণপূর্ত বিভাগে চাকরি নেন এবং সারা দেশে অনেক দাতব্য সংস্থা স্থাপনের জন্য তাঁর সম্পদ ব্যবহার করেন। ইমরান খানের মা শওকত খানুম ভারতের জলন্ধর জেলায় ঐতিহ্যবাহী ক্রিকেটীয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ইমরান খান তাঁর চার বোনের একমাত্র ভাই।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ক্যাবল কলেজে তিনি দর্শন রাজনীতি এবং অর্থনীতি অধ্যয়ন করেন। মজার ব্যাপার হল আরেক প্রাক্তন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোও একই সময়ে অক্সফোর্ডের ছাত্র ছিলেন। লেখক ক্রিস্টোফার স্ট্যানফোর্ড বলেছেন যে, দুজন কিছু সময়ের জন্য রোমান্টিকভাবে জড়িত ছিলেন। ভুট্টোই প্রথম ইমরান খানকে ‘লাহোরের সিংহ’ বলে অভিহিত করেন। ইংল্যান্ডে থাকাকালীন ইমরান খান তাঁর ক্রিকেটীয় প্রতিভার জন্য নজরে পড়েছিলেন। পরে তিনি ওরচেস্টারশায়ারের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেট খেলেছিলেন এবং অক্সফোর্ড ব্লুজ ক্রিকেট দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
১৯৭৬ সালে তিনি পাকিস্তানে ফিরে আসেন এবং জাতীয় দলের অংশ হয়ে ওঠেন। সত্তর দশকের শেষের দিকে ইমরান খান একজন তারকা হয়ে উঠেছিলেন, একজন ক্রিকেট সেনসেশন, বিশ্বের সেরা বোলারদের একজন এবং রিভার্স সুইং কৌশলের পথিকৃৎ। ক্রিকেট খেলার সাথে সাথে আধুনিক জীবনের অভস্থতার কারণে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম তাকে অভিজাত প্লেবয় বলে অভিহিত করেছিল।
এশিয়া তাঁর মতো ক্রিকেটার অল্পই পেয়েছে। এখন তাঁর ৭১। ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় ভরা। তবুও ইমরান খানের ভাবমূর্তি সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ডার– যিনি একক চেষ্টায় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতেন। বাঘের মতো অধিনায়কত্ব। ব্যাট হাতে মাঠে নামলে ড্রেসিং রুম নিশ্চিন্ত ও প্রতিপক্ষ চাপে। ইমরান খানকে যেসব প্রজন্ম খেলতে দেখেছে, তারা এই কথাগুলোর সঙ্গে একমত হবেই হবে।
খেলার মাঠ থেকে রাজনীতির মাঠ– পাকিস্তানে তিনি জনপ্রিয়তায় ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। ক্যাপ্টেন, প্লেবয়, জনহিতৈষী, রাজনীতিবিদ, প্রধানমন্ত্রী– বিভিন্ন রূপে ধরা দেওয়া ইমরান খান নিয়াজীকে আপনি কি হিসেবে মনে রাখবেন সেটা আপনার ব্যপার। তবে আমরা আজ এই মানুষটির কয়েকটি অবতার পরিক্রমের চেষ্টা করব
অভিষেকের পর থেকেই পাকিস্তান ক্রিকেট দলের মোটামুটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে পড়েন দীর্ঘদেহী এই অলরাউন্ডার। অধিনায়ক হওয়ার আগে দুটি ও অধিনায়ক হওয়ার পর আরও দুবার পাকিস্তানের হয়ে বিশ্বকাপে অংশ নেন ইমরান খান। কিন্তু কোনবারই সেমিফাইনাল পেরুতে পারেননি। ১৯৮৭ বিশ্বকাপে পাকিস্তান সেমিফাইনালে হেরে যাওয়ায় ইমরান খান হতাশা থেকে হঠাৎ অবসর ঘোষণা করেন। ইমরান খানের সেই ঘোষণায় পুরো ক্রিকেট বিশ্ব হতাশ হয়ে পড়ে।
সবার হতাশা ছিল ইমরান খানের মতো গ্রেট প্লেয়ার বিশ্বকাপ না জিতেই অবসর গ্রহণ করে ফেললেন? ১৯৮৮ তে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউল হক ইমরান খানকে পাকিস্তান ক্রিকেটে ফিরিয়ে আনেন। তাকে বলা হয় পাকিস্তান ক্রিকেটে তাঁর প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি। ইমরান খানকে পুনরায় পাকিস্তান দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়।
৯২ বিশ্বকাপে ইমরান ছিলেন প্রায় ৩৯ বছরের এবং তাঁর সোল্ডার অনেকটা ভাঙ্গা ছিল এবং সে কারণে বোলিংয়ের সেই ধার লক্ষ্য করা যাচ্ছিল না। পরাজয় দিয়েই শুরু হয়েছিল বিশ্বকাপ। প্রথম পাঁচ ম্যাচে মাত্র এক জয়, এক ম্যাচে তো ৭৪ রানে অলআউট। তারপরও ১৯৯২ সালের ২৫ মার্চ মেলবোর্নে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে পাকিস্তানকে নিজেদের একমাত্র বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন। ইমরান খান পাকিস্তান ক্রিকেটকে তার সোনালী যুগে নিয়ে গিয়েছিলেন। পাকিস্তান ক্রিকেট বিশ্বে অন্যতম শক্তিশালী দল হয়ে ওঠা কিংবা আনপ্রেডিক্টেবল তকমা গেঁথেছিলো এই বিশ্বকাপে ইমরান খানের হাত ধরেই।
আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব আর সহজাত নেতৃত্বগুণ দিয়ে ইমরান খান হয়ে উঠেছিলেন মাঠে ও মাঠের বাইরে একজন সত্যিকারের লিডার। সময় যত গড়িয়েছে, ক্রিকেটের ইতিহাস যত প্রসারতা পেয়েছে, ইমরান খানের ব্যক্তিত্বের চৌম্বকক্ষেত্র শক্তিশালী হয়েছে ততই। বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার ইমরান খানের নাম আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তাদের ওয়েবসাইটে ইমরান খান সম্পর্কে বলা হয়- “একজন যোদ্ধা যে শেষ বল পর্যন্ত লড়ে গিয়েছে।”
১৯৯৫ সালে ইমরান খান জেমিমা গোল্ডস্মিথকে বিয়ে করেন। ২০০৪ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়, কারণ জেমিমা পাকিস্তানে জীবনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারেননি। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ইমরান খান পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সাংবাদিক রাহাম খানকে বিয়ে করেন। একই বছর অক্টোবরে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। সবশেষ ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চার মাস আগে ইমরান খান বুশরা বিবিকে বিয়ে করেন।

ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর ৯২ বিশ্বকাপে পাওয়া তাঁর পুরস্কারের অর্থ ৯০ হাজার ইউরো দিয়ে লাহোরে তাঁর মায়ের নামে শওকত খানুম ক্যান্সার সেন্টার হাসপাতাল তৈরি করেন। এখন পর্যন্ত এটি পাকিস্তানের বৃহত্তম ক্যান্সার কেয়ার হাসপাতাল। ক্রিকেটীয় কর্মজীবনে খানকে একাধিকবার রাজনৈতিক পদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ১৯৮৭ সালে, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ জিয়া-উল-হক তাকে পাকিস্তান মুসলিম লীগে (পিএমএল) রাজনৈতিক পদের প্রস্তাব দেন যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। নওয়াজ শরিফ তাকে তার রাজনৈতিক দলে যোগদানের আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন। তিনি রাজি হননি। অবশেষে ১৯৯৬ সালে ইমরান খান রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এবং তিনি তাঁর নিজস্ব রাজনৈতিক দল পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিকি ইনসাফ) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি তাঁর প্লেবয় ইমেজটিকে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিমে রূপান্তরিত করে নিজেকে সংস্কারক হিসেবে তুলে ধরেন।
তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জোরালোভাবে প্রচার শুরু করেছিলেন, বংশবাদী রাজনীতির অবসান ঘটাতে এবং পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদদের একটি সম্পূর্ণ নতুন শ্রেণি গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতিগুলো সমর্থকদের সাথে বিশেষত শহুরে মধ্যবিত্ত এবং তরুণদের সাথে ক্লিক করেছিল, বিশেষ করে যারা পাকিস্তানের প্রস্তর যুগ শেষ না হওয়াতে ক্লান্ত ছিল। মোহভঙ্গের এই ঢেউকে পুঁজি করে ইমরান খান অবশেষে ২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন।
২০২২ সালের এপ্রিলে ইমরান খানের সরকার যখন সংসদে ‘নো ভোট’-এ হেরে যায় তারপর থেকে একের পর এক মামলায় জড়ান হয় তাকে। সেসময় তাঁর দল পিটিআই এবং তাঁর পার্টির সদস্যদের ওপর ১৪০টি অপরাধের দায় চাপান হয়। এর মধ্যে ৩৪টি সরাসরি ইমরান খানের বিপক্ষে। ৯ মে ২০২৩ তাকে অ্যারেস্ট করা হয় ইসলামাবদ হই কোর্ট থেকে। এর মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে পাকিস্তানজুড়ে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে। কিছু কিছু জায়গায় প্রতিবাদ দাঙ্গায় রূপ নেয়। দুই হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইমরান খান তাঁর গ্রেপ্তারের জন্য সেদেশের সেনার দিকে আঙুল উঠানোর কারণে কিছু ঐতিহাসিক দৃশ্য দেখা যায়। প্রথমবারের মতো সাধারণ মানুষ সেনার বিপক্ষে সরাসরি লড়াই করে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়– এক একাকী মেয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে অবস্থিত মিলিটারি হেডকোয়ার্টারের গেট ধরে ঝাকাচ্ছে। যেটাকে ১৯৭১ সালের পর পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ক্রাইসিস মনে করা হয়।
নভেম্বর ২০২২-এ তাকে হত্যা চেষ্টা করা হয়। পায়ে বেশ কয়েকটি গুলি লাগে তাঁর। মনে করা হয়– পাকিস্তান আর্মি’র পক্ষে এটা মানা কষ্টকর যে, কোনো রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব এতো বেশি জনপ্রিয় হয়ে যায় যে, সে আর্মি’র চেয়ে বেশি প্রভাবশালী হয়ে ওঠে বা আর্মিকে ছাপিয়ে যায়। তবে এটা বলা ভুল হবে না– ইমরান খান যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন তাঁর কাছে সুযোগ ছিল সিস্টেম পরিবর্তনের, এবং পাকিস্তানে আর্মির প্রভাব কমিয়ে একটি সাস্থ্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা। কিন্তু তিনি তা করেননি।
আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব আর সহজাত নেতৃত্বগুণ দিয়ে ইমরান খান হয়ে উঠেছিলেন মাঠে ও মাঠের বাইরে একজন সত্যিকারের লিডার। সময় যত গড়িয়েছে, ক্রিকেটের ইতিহাস যত প্রসারতা পেয়েছে, ইমরান খানের ব্যক্তিত্বের চৌম্বকক্ষেত্র শক্তিশালী হয়েছে ততই
ইমরান খানের সমালোচকরা প্রায়ই বলেন যে, তাকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্ষমতায় বসিয়েছিল। সেনাবাহিনী তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল এই আশায় যে, তিনি একজন নমনীয় বেসামরিক নেতা হবেন। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তিনি সেনাবাহিনীর কর্তৃত্বকে তাদের নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে একের পর এক রেড লাইন অতিক্রম করেছেন।
রাষ্ট্রীয় উপহার বেআইনিভাবে বিক্রির মামলায় ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ইসলামাবাদের একটি দুর্নীতি বিরোধী আদালত। রায়ে ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে ১০ বছরের জন্য সরকারি পদে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া দুজনের প্রত্যেককে ৭৮৭ মিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি জরিমানা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ইমরান খান ও তাঁর দলের ভবিষ্যত রাজনীতি ঝুঁকির মুখে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন বিরোধীরা।
২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ইমরান খান বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি। ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে পাকিস্তানের ১৬তম সাধারণ নির্বাচন। যেখানে ইমরান খানের অনুসারীরা স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সর্বোচ্চ ৯৩ আসনে জয় লাভ করে। সেই নির্বাচনের ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও পাকিস্তানে এখনও সরকার গঠিত হয়নি।
সদ্য সমাপ্ত ভোটে ব্যপক কারচুপির অভিযোগ করে আসছে তাঁর দল। এখন প্রশ্ন সামনে আসে, কী হবে আগামীতে? পাকিস্তানের আর্মি অন্য সব প্রধানমন্ত্রীর মতো ইমরান খানকেও শেষ করে দিবে? না কি ইমরান খান তাঁর সমর্থকদের শক্তিতে পাক আর্মির ক্ষমতাকে শেষ করার ক্ষেত্রে সফলতা লাভ করবে?
যদিও এমন পরিস্থিতিতে আমরা পাকিস্তানের ইতিহাসে সবসময় মিলিটারি ক্যু দেখতে পাই। মিলিটারির তখন ভাষ্য থাকে, অনেক হয়েছে এই গণতন্ত্রের নাটক– এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে ডিকটেটর হতে হবে। এখন পর্যন্ত চারবার পাকিস্তানে মিলিটারি ক্যু হয়েছে এবং সেইসাথে আরও তিনবার অসফল ক্যু-এর চেষ্টা ছিল।
এই মূহুর্তে সেখানে যে বিক্ষোভ হচ্ছে সেটা দেখে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সাধারণের মধ্যে আর্মিকে নিয়ে এতো রাগ আগে দেখা যায়নি। আর ইমরান খানের জনপ্রিয়তা এটাও বলছে, আর্মির শক্তি হয়তো আগের মতো অতোটা নেই। সমালোচকরা প্রায়শই বলে যে ইমরান খানের পতনের সাথে পাকিস্তানের অর্থনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জেনারেলদের হাতের পুতুল হয়ে থাকাতে তাঁর অস্বীকৃতি। এই যুদ্ধে পাকিস্তানের জনগণই চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আইনের মারপ্যাচে ইমরান খান বর্তমানে কারাগারে, তবুও সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে পাকিস্তানের জনগণ তাঁর পক্ষেই ব্যাট ধরেছে। কারণ প্রধানমন্ত্রিত্বের পদ থেকে অপসারণ, জেলযাত্রা এবং গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগের বহু আগেই ইমরন খান মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছেন।