Author Picture

আজাদুর রহমান-এর একগুচ্ছ কবিতা

আজাদুর রহমান

সহজাত

মানুষ তোমাকে অবহেলা করবে
যে কোন দিন
যে কোন সন্ধ্যায়
তুমি কল্পনাও করতে পারবে না
এমন ঘোরতর বর্ষার দূপুরে
মানুষ তোমাকে অবহেলা করবে।

পথের পাশে ওত পেতে থাকা
শিকারির মত সন্তর্পনে উঠে আসা মানুষ
পায়ে পা ঘষে তোমাকে অবহেলা করবে।

কোথাও না কোথাও কোন এক বয়সে
কোনও না কোনও ভাবে মানুষ
তোমাকে অবহেলা করবে।

 

চূড়া

চূড়ায় উঠব না।
কাছাকাছি গিয়ে নেমে আসব,
সিড়ি খুঁজে না পেলে,
নিচ দিয়ে হেঁটেহুঁটে চলে আসব!
অপেক্ষা করব না।

অপেক্ষা এক অনিশ্চিত যাত্রা
পাশ-ফেলের পাশাখেলা,
অপেক্ষার গভীরে ডুবে থাকে
সু অথবা দুঃসংবাদ,
বিচ্ছেদ অথবা প্রেমের প্রস্তাব।
অভ্যেসের মত সেও
মৃত্যু পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখে!
একদিন হয়ত কেটেও ফেলে!
অপেক্ষার অবহেলায় থাকব না।

নিচ দিয়ে হেঁটেহুঁটে চলে আসব,
চূড়ায় উঠব না।

 

ইনট্যাক্ট নিউরন

যতদিন তুমি আমাকে মনে রাখবে
ততদিন আমার মৃত্যু নাই,
ঐ স্মৃতিটুকুই আমি, আর বাদবাকি
হাড় মাংস চক্ষু জিহবা কর্ণ নাসিকা
হৃদপিন্ড কলিজা ফুসফুস কিডনি
চামড়া চুল, স্মৃতিহীন ইনট্যাক্ট নিউরন
আরও যা যা সব তোমার মত, এক।

শুধু স্মৃতিটুকু আলাদা, ঐটকুই
আমি।

আমি সময়কে খন্ড খন্ড করে
গ্রহণ করেছি
দীর্ঘমেয়াদি দৃশ্যের মধ্যে
অনেক চরিত্র থাকে,
সেখানে গল্প বেড়ে যায়
সম্পর্কের ঠিক থাকে না,
ভুল হয়, ভয় হয়,
তাছাড়া মানুষ প্রচুর মিথ্যা বলে।

 

এস এম এস

আপনি বেঁচে আছেন!
এ রকম একটা জরুরি মিথ্যা
তীরের মত ছুটে গেছে
সবখানে!

অথচ আপনার কাঁধে লাশ
সেটা আপনার ই!

 

ছুরি

যে কোন স্মৃতির পিছনে
কোমল এক ছুরি থাকে,
খুব কোমল,
এত কোমল যে,
ফুলের পাপড়িও তাকে
টের পায় না।

আমরা স্মৃতি জমা করি
গোলাপ লাগাই, তারপর
ছুরির জন্য অপেক্ষা করি,
খুব কোমল এক ছুরি,
এত কোমল যে,
পাপড়িও তাকে
টের পায় না।

আরো পড়তে পারেন

বেওয়ারিশ প্রেমের কবিতা

১. জীবনকে বিজ্ঞাপনের মতো সেঁটে দিয়ে দেখেছি, আমাকে গ্রহণ করেনা কেউ। আমাকে ভালোবাসে না ঘুমগন্ধওয়ালা সকাল— আমাকে ভালোবাসে না বাজারের জনবহুল রোদ, আমাকে ভালোবাসে না কেউ, ভিক্ষুক, শ্রমিক, চাষী আমাকে ভালোবাসে না, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে ভালোবাসে না, শোষক কিংবা শোষিত, শাসক ও প্রজা কেউই ভালোবাসে না, আমাকে ভালোবাসে না তরুণ-তরুণী-বৃদ্ধ বা যুবা, পার্থিব কোনো….

হোসনে আরা শাপলা’র একগুচ্ছ কবিতা

আলতু ব্যথা কোন এক শুভ্র সময় আমাদেরও ছিল পাশাপাশি-মুখোমুখি বসে থাকা শুধু হিসেব-নিকেশ, দাবি-দাওয়া, চাওয়া-পাওয়া এসবের বালাই ছিলো না কোন শুধু কানায় কানায় পূর্ণ ছিলো ভালোবাসা। চোখের তারায় ডুবে গিয়ে অন্বেষণ শুধু শত জনমের সুখ। ওইসব স্বপ্নমাখা দিন কোন দরজা দিয়ে পালিয়ে গেল কোথায় তারই জন্য মনের মধ্যে কেমন আলতু ব্যথা।   তৃপ্তি ভরসার হাত….

এরশাদ জাহান-এর একগুচ্ছ কাপলেট

কাপলেটগুচ্ছ:  ১. গোলাপ বলে ঠোঁট বাঁকিয়ে কে তোর আমি দেখাস দাবি! ভ্রমর শুধায়— প্রেমধর্মের কাবিননামায় খুঁজিস পাবি। ২. ভেসে চলার ক্লান্তি মুছতে তীরের কাছে ছুটল পানা; পৌঁছে দেখে— ভাঙতে ভাঙতে তীরেরই নেই ঠাঁই ঠিকানা! ৩. চোখের তিয়াস মিটিয়ে নিতে ঘুম চাইলাম রাতের কাছে, আঁধার বলল— নিদ্রাবিহীন রাত্রি নিজেই জেগে আছে! ৪. ধর্মকাবা মক্কা, কাশি, প্রেমের….

error: Content is protected !!