
ছুরি
যে কোন স্মৃতির পিছনে
কোমল এক ছুরি থাকে,
খুব কোমল,
এত কোমল যে,
ফুলের পাপড়িও তাকে
টের পায় না।
আমরা স্মৃতি জমা করি
গোলাপ লাগাই, তারপর
ছুরির জন্য অপেক্ষা করি,
খুব কোমল এক ছুরি,
এত কোমল যে,
পাপড়িও তাকে
টের পায় না।
ইচ্ছে
যার ঈশ্বর আছে
সে স্বর্গের কথা ভাবে।
যার নাই
সে হয়ত নিজেই
স্বর্গ বানাতে চায়!
ভালবাসা ছাড়া কেউ কি
সত্যি দুঃখ পায়
কারও মৃত্যুতে!!
যারা শোক-শোক বলে
প্রয়োজনে রোল তোলে
তারা জানে
পৃথিবী পাতলা হচ্ছে
তাদের বসার জন্য!!
নিভে যাও, অনেক করেছো
এই পথটা নিশ্চয় জানে,
আমি ঠিক কোথায় যাবো।
আমি একমনে হাঁটছি
আমাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা
না করাই ভাল,
—ভুলভাল উত্তর পাবেন।
নেশায় আমার পা টলছে।
যা কিছু মদ
তা এখন শরীরের শিরায় শিরায় বহমান।
সমস্ত অভিমান চৌম্বক, শুধু তাঁর দিকে
ধাবমান জোব্বা পরা হরিণের মত,
হেই ঘুমগ্রস্থ চাঁদ!
নিভে যাও। অনেক করেছো।
পথটাকে সোজা করে ধরুন, আমি হাঁটছি।
আমার পথের উপর ঈশ্বর দাঁড়িয়ে আছেন।
ঘুমের নিয়ম
ঘরের ভিতর প্রচুর প্রজাপতি,
জেব্রা রঙের মাছেরা উড়ছে।
গনতন্ত্রের কথা বলে বলে ক্লান্ত ঘড়ি,
দেয়ালে শুয়ে আছে চিরাচরিত রাস্ট্র,
-জেনে নিয়ে ঘুমের নিয়ম।
চায়ের পেয়ালা, অ্যামিবা, অ্যালগি
ডাইনোসোর হত্যা অথবা হঠাৎ অগ্নুৎপাত,
কাম এবং কামড় উড়ছে।
জানলার বাইরে শাখা পরে শুয়ে আছে নদী,
—জেনে নিয়ে ঘুমের নিয়ম।
কথার আঘাত
কথার আঘাতে আপনার শরীর কেটে গেছে,
আপনি কাটা শরীর নিয়ে ক্লিনিকে গেছেন।
বেশ কিছু টেস্ট করা হয়েছে।
খলিলুর রহমানের চেম্বার পাঁচতলায়,
তিনি রিপোর্টগুলো দেখলেন,
চোখ নরম করে তাকালেন,
বললেন-ভয়ের কিছু নাই,
আপনার কিছু হয় নি।
তারপরও কিছু ঔষধ লিখে দিচ্ছি,
ভাল ঘুম হলে দেখবেন,
সব ঠিকঠাক,
আগের মত সবকিছু।
.. দেখুন, পৃথিবীর পরিস্থিতি ভাল না!
কারোরই ঘুম ভাল হচ্ছে না!
..আপনি নিচে এসে রিক্সা নিলেন,
সত্যি, শরীরের কোথাও
আঘাতের চিহ্ন নেই।
আপনি হেসে ফেললেন
ঠিক সেই মুহুর্তে-
শহরটা অন্যরকম হয়ে গেল,
চারপাশে সবুজ সবুজ গাছ,
গাছে গাছে পাখি,
আপনি পাখিদের কিচিরমিচির
শুনতে পেলেন!
মন ভাল হয়ে গেল।
আপনি প্রেসক্রিপশনটা হাওয়ায় ভাসিয়ে দিলেন।
কাকরাইল পার হয়ে বেইলি রোড, তারপর
হলি ফ্যামিলি..
রিক্সাটা আর যাচ্ছে না,
মগবাজার মোড়ে এক মধ্যবয়সি
রক্তে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
কথার আঘাতে কাটা পড়েছে সে।
চারদিক থেকে যারা তাকে দেখছে
তাদেরও শরীর রক্তাক্ত,
ঠিক আপনার মত
কথার আঘাতে রক্তাক্ত
ক্ষত
বিক্ষত।