
প্রজাপতি
দুর থেকে কেউ আপনাকে
নাম ধরে ডাকে।
সেখানে গিয়ে দেখেন,
আপনি ডাকছেন তাঁকে।
আপনাকে, আপনি ছাড়া
কেউ ডাকে না,
ব্যাপারটা জানার পরও
সাড়া দেন।
আপনি জানেন,
ঘুম আপনাকে খেয়ে ফেলে,
আপনি অভ্যেসে শুয়ে পড়েন।
আপনাকে সন্ধিবিচ্ছেদ করলে,
একজন আপনি’র সাথে বেশ কিছু
নিস্ফলা প্রত্যয়, কতিপয় আনন্দ গান,
পিতার কারণে ব্যর্থ পুত্র
পুত্রের কারণে ব্যর্থ পিতা,
আর কিছু
সবুজ
নীল
লাল-হলুদ
পাওয়া যাবে।
আপনার মগজ এক নীল আকাশ
সেখানে উড়ে বেড়ায় মৃত্যু
আর এক রঙিন প্রজাপতি।
যতদিন তারা উড়বে
ততদিন
আপনাকে দুর থেকে কেউ ডাকবে,
কাছে গিয়ে দেখবেন,
আপনি ডাকছেন তাঁকে।
চূড়া
চূড়ায় উঠব না।
কাছাকাছি গিয়ে নেমে আসব,
সিড়ি খুঁজে না পেলে,
নিচ দিয়ে হেঁটেহুঁটে চলে আসব!
অপেক্ষা করব না।
অপেক্ষা এক অনিশ্চিত যাত্রা
পাশ-ফেলের পাশাখেলা,
অপেক্ষার গভীরে ডুবে থাকে
সু অথবা দুঃসংবাদ,
বিচ্ছেদ অথবা প্রেমের প্রস্তাব।
অভ্যেসের মত সেও
মৃত্যু পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখে!
একদিন হয়ত কেটেও ফেলে!
অপেক্ষার অবহেলায় থাকব না।
নিচ দিয়ে হেঁটেহুঁটে চলে আসব,
চূড়ায় উঠব না।
বৃষ্টি হতে পারতাম
জীবন থেকে ঝরে পড়ার আগে
বৃষ্টি হতে পারতাম,
শুকনো পাতারা উড়ছে হাওয়ায়,
ওরাও পারত বৃষ্টি হয়ে নামতে।
তেমন ভাল আসকারা পেলে
জোছনা ভেজা কাঠমালতির ডাল থেকে
টুপ করে নেমে পড়তাম মাটিতে,
মিশে যেতাম ফোঁটায় ফোঁটায়।
মাটি থেকে শিকড়ে, গাছেদের শরীরে
পাতার পরে ফুলে ফলে, শস্য-বীজে
পাখিদের পাখায় পাখায়
চলে যেতে পারতাম।
বার বার জন্মের আশায়
আমরা আবার বৃষ্টি হতে পারতাম
আসছি
ফুল,
তুমি ফুটে থাকো
আমি আসছি।
ঘুম,
তুমি নিঃসঙ্গ পদাবলী
আমি আসছি।
আর একটু স্থির হও ওম
আমি আসছি।
ভুলগুলো প্রস্তুত হও
আসছি আমি।
কফিনের দরজা খোলা হয়েছে
আমি আসছি।
নিঃসংগ একটা লাইন
বড় জোর একটা লাইন লিখে দিতে পারি,
কাটা পড়া ট্রেনের মত অকেজো,
ক্লান্ত
মর্মাহত একটা লাইন ।
তুমি হয়ত ব্যর্থ হয়েছ,
দুঃখ পেয়েছ,
বন্ধুরা কথা দিয়ে,
কথা রাখে নি,
খুব করে বকে দিয়েছে কেউ।
ভুল পৃথিবীতে এসে তুমি হয়ত বুঝে গেছো-
এখান থেকে পালাবার দরজা নেই,
অনেক কিছু ফেলতে ফেলতে একদিন তাই
ফেলে দিয়েছ পরশ পাথর।
হয়ত ভালবাসতে গিয়ে আর ভালবাসা হয় নি,
তোমার মন খারাপ,
নিজের সাথে কথা বলতে বলতে ক্লান্ত তুমি,
বিষন্ন তোমার চোখ জোড়া।
বড় জোর একটা লাইন লিখতে পারি
তোমার কফিনের উপরে রাখা
রজনীগন্ধার মত নিঃসংগ একটা লাইন।