Author Picture

খন্দকার রেজাউল করিম

শিক্ষক, গবেষক, লেখক। তাঁর শিক্ষকতা জীবনের শুরু ১৯৭৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭৮ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা যান। ১৯৮৩ সালে ইউনিভার্সিটি অব অরিগন থেকে পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপরে ৩০ বছর কাটিয়েছেন আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষনা ও শিক্ষকতার কাজে। বর্তমানে তিনি আমেরিকার ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ইমিরেটাস প্রফেসর।
ড. করিম গবেষনার কাজে জড়িত ছিলেন নাসা, মার্কিন জাতীয় বিজ্ঞান সংস্থা, মার্কিন এনার্জি সংস্থা, ন্যাটো, টোকোমাক ফিউশন টেস্ট রিয়্যাক্টর এবং আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান প্রকল্পে। তাঁর ৮০টি গবেষনা-প্রবন্ধ রয়েছে। এর বাইরে লিখেছেন দুটি বই- Quantum Nursery Rhymes ও কোয়ান্টাম রাজ্যে ডালিম কুমার।

সোনার গহনার দোকানে আইনস্টাইন

আইনস্টাইন এক অজপাড়াগাঁয়ে আমার অতিথি হয়ে এসেছেন। বেজায় আলসে লোক, রাতে দশ ঘণ্টা ঘুমান। এমন ঘুমকাতুরে লোকের মাথায় কী করে যে এত তত্ত্ব আসে কে জানে? ‘কুয়াশার মধ্যে এক শিশু যায় ভোরের ইস্কুলে নিথর দীঘির পাড়ে বসে আছে বক।’ পৌষের সকাল। আইনস্টাইন বেহালায় ‘এ মনিহার আমায় নাহি সাজে’ গানের সুরটি তোলার চেষ্টা করছেন। আমি এসে….

ইলিশ মাছের ভর

বাংলাদেশের এক অজপাড়াগাঁয়ে আইনস্টাইন আমার বাসায় অতিথি হয়ে এসেছেন। কেমন করে এ অসম্ভব ঘটনা সম্ভব হয়েছে তা জিজ্ঞেস করবেন না। শুনেছিলাম ‘মিষ্টান্নে ইতরজনা’, আমি তার লাগসই উদাহরণ, খেতে খুব ভালোবাসি। আমার প্রিয় কবিতার লাইন, ‘যত খুশি তত চুষি, হাড়ে হাড়ে রস।’ কিন্তু আইনস্টাইনের রসনা আমার জিহ্বাকেও হার মানায়। কাল গাঁয়ের হাটে আইনস্টাইনকে জিলাপি কিনে খাইয়েছি।….

আমি চেয়েছি কল্পনার ডানায় ভর করে বিজ্ঞানের আনন্দ সবার কাছে পৌঁছে দিতে

খন্দকার রেজাউল করিম শিক্ষক, গবেষক, লেখক। তাঁর শিক্ষকতা জীবনের শুরু ১৯৭৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭৮ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা যান। ১৯৮৩ সালে ইউনিভার্সিটি অব অরিগন থেকে পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপরে ৩০ বছর কাটিয়েছেন আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষনা ও শিক্ষকতার কাজে। বর্তমানে তিনি আমেরিকার ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ইমিরেটাস প্রফেসর। ড. করিম গবেষনার কাজে জড়িত….

ক্ষুধা এবং করোনা ভাইরাস

ক্ষুধা করোনা ভাইরাসের মতো সংক্রামক ব্যাধি নয় হলে ভালোই হতো, এতদিনে ক্ষুধা-রোগের একটা সমাধান বের হয়ে যেত। শিশুর পেটে যে ক্ষুধার আগুন জ্বলে তা থেকে আমি-আপনি নিরাপদ, ও আগুন আমাদের পেটে ছড়িয়ে পড়ে না। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনে প্রথম করোনা ভাইরাস বাদুড় থেকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে চীনের উহান প্রদেশে….

মুনশী ভাইয়ের হজ

মুনশী ভাই কর্ম জীবন শুরু করেছিলেন একজন শিশু শ্রমিক হিসেবে, দশ বছর বয়েসে বাবাকে হারিয়ে হয়ে গেলেন পাড়ার হাজী সাহেবের বাসার চাকর। যখন পাড়ার ছেলেরা রাস্তার ধারে ক্রিকেট খেলতো, দেখতো ছক্কা মারার স্বপ্ন, তখন মুনশী ভাই স্বপ্ন দেখতেন মক্কা যাওয়ার। মনিব আর মনিবের বউ দুজনেই হাজী, তাঁদের কাছে মক্কার অনেক গল্প শুনেছেন তিনি I জমজমের….

পৃথিবী থেকে পলায়ন

‘‘নূতন আলোয় নূতন অন্ধকারে লও যদি বা নূতন সিন্ধুপারে…” ‘পৃথিবী থেকে পালাতে চাই। যেতে চাই ল্যানিয়াকিয়া মহাপুঞ্জের কেন্দ্রে। ওখানে কোটি কোটি গ্যালাক্সির মেলা বসেছে। এর জন্যে দায়ী নাকি দ্য গ্রেট এট্ট্রাক্টর। ব্যাপারটা রীতিমতো রহস্যময়। ইচ্ছে করলে তুই আমার সঙ্গী হতে পারিস। এখন অংক কষে দেখতে হবে পৃথিবী থেকে পলায়ন সম্ভব কি না! মানে, খরচপাতি, যন্ত্রপাতি….

ধর্ম নিয়ে খুনোখুনি

আমার ছোট বেলার বন্ধু সমীরণ ঘোষ। ও ছিল হিন্দু, কারণ ওর মা-বাবা হিন্দু। আমি ছিলাম মুসলমান, কারণ আমার মা-বাবা মুসলমান। হিন্দু না মুসলিম- কোন মায়ের কোলে জন্মাবে তাতে শিশুর তো কোনো হাত নেই। সমীরণ এবং আমি কেউই ধর্ম বেছে নিই নি।৷ শিশু বয়েসে ধর্মের কিই বা বুঝি? জন্মের আকস্মিকতাই আমাদের ধর্ম নির্ধারণ করে দিয়েছিলো। বুড়ো….

রুক্মিনী, বিন্দু, নোরা

‘‘জাতে হয়তো মেথর হবে, কিংবা নেহাত ওঁচা, যাত্রীঘরের করে ঝাড়ামোছা, পঁচিশ টাকা দিতেই হবে তাকে! এমন হলে দেউলে হতে কদিন বাকি থাকে।’’ বিলাসপুর ইস্টেশনে ট্রেন বদল করতে হবে, ছয় ঘন্টার বিরতি। ধরে নিচ্ছি যাত্রীটি রবীন্দ্রনাথ নিজেই, সাথের বিনু নামের মেয়েটি তাঁর অসুস্থ স্ত্রী মৃণালিনী দেবী। বিনু গল্প জুড়ে দিয়েছে যাত্রীঘরের মেথর রুক্মিনীর সাথে। সব কিছুতেই….

আমেরিকার ফুটবল মা

‘দারুন সে, সুন্দর সে, নহে সে ভোগীর লোচনলোভা।’ -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ওরা অনেকেই মা। ওদের মাথায় ঘোমটা নেই। লজ্জা ওদেরকে দেখে লজ্জা পায়! ওরা রুক্ষকেশী, অলক্ষ্মী। খেলার মাঠে ওরা ঝড়ের বেগে ছুটে চলে। ওদের পায়ে মল নয়, বল জড়িয়ে থাকে। মার্কিন মহিলা ফুটবল খেলোয়াড় এলেক্স মরগ্যান, জেসিকা ম্যাকডোনাল্ড, কার্লি লয়েড, মিয়া হ্যাম, এবং ক্রিস্টিন লিলির কথা….

আঁচল-ভরা বই

বই-মেলা থেকে আঁচলভর্তি বই নিয়ে এক কিশোরী হাসি মুখে বাড়ি ফিরছে। দৈনিক পত্রিকায় এই ছবিটি দেখে চোখ জুড়িয়ে গেলো। নয়ন ভরা জল, আঁচল ভরা ফুল, এ সব আমার চেনা। কিন্তু আঁচল ভরা বই ? কিশোরীর ভীরু মনে প্রেমের মুকুলের পাশাপাশি এবার জ্ঞানের মুকুলও ফুটবে নাকি? এ মেয়ের বর জুটবে তো? রবীন্দ্রনাথের ‘শেষের কবিতা’ উপন্যাসের নায়ক….

error: Content is protected !!