Author Picture

ত্বহা হুসাইনের দিনগুলি

কাউসার মাহমুদ

পাঁচ

সে জানে না কীভাবে কোরআন মুখস্ত করেছিল। কীভাবেই বা তা শুরু করে আর কীভাবেই বা তার পুনরাবৃত্তি করেছিল। যদিও গ্রামের মকতবে তার এমন অসংখ্য ঘটনার কথা মনে পড়ে; যার কিছু তাকে এখনও হাসায়, কিছু ব্যথিত করে। তবে মকতবে যাওয়ার স্মৃতিটা মোটামুটি মনে করতে পারে ঠিকই। যেমন তার কোনো এক ভাইয়ের কাঁধে চড়ে মকতবে যেত সে। মকতব ছিল বাড়ি থেকে বহুদূর। আর এতদূর পথ অতিক্রম করে যেতে বেশ ক্লান্ত হয়ে যেত। কিন্ত ঠিক কবে গ্রামের মকতবে যাওয়া শুরু করেছিল; এ কথা অবশ্যি মনে করতে পারে না সে। তার বরং এটুকুই মনে পড়ে যে, ভোরবেলা নিজেকে সে মহান শিক্ষকের সম্মুখে দেখতে পায়। তার চারপাশে বেশকিছু জুতোর সংগ্রহ; যেগুলোর কোনো একটি নিয়ে সে খেলাধুলাও করেছিল। এমনকি সে এও মনে করতে পারে, কত অসংখ্য তালি ছিল ওতে! আর আমাদের শিক্ষক তখন একটি কাঠের বেদিতে উপবিষ্ট। যা খুব উঁচু নয় আবার নীচুও নয়। ওটা একদম দরজার ডান দিকে রাখা হয়েছিল। ফলে যে কেউ ভেতরে প্রবেশ করবে শিক্ষকের পাশ দিয়েই যাবে। সুতরাং যখনই শিক্ষক মকতবে আসতেন, তখন তার অভ্যেস ছিল তড়িৎ সে তার আলখাল্লাটি খুলে বালিশের মত পেচিয়ে নিজের পাশে রাখতেন। এরপর জুতো খুলে বেদির ওপর আড়াআড়ি বসে একটি সিগার জ্বালাতেন এবং ছাত্রদের নাম ডাকা শুরু করতেন।
জুতোর ক্ষেত্রে নিতান্ত পরিধানের অনুপুযুক্ত না হলে শিক্ষক মহোদয় তার পাদুকা জুড়ো ফেলতেন না। ফলে তার পরিধেয় জুতোজোড়া ডান-বাম, উপর নীচ সবদিক থেকেই ছিল পট্টি দেওয়া। তাই কখনও ওই তালির ওপর আরো তালির প্রয়োজন হলে, মকতবের কোনো একজন ছাত্রকে ডাকতেন তিনি। জুতো নিয়ে তার হাতে দিয়ে বলতেন, ‘এখানে নিকটেই ওই মুচিটির কাছে গিয়ে বলবে, আমাদের শিক্ষক জুতোটির ডান দিকে একটি তালি মেরে দিতে বলেছেন। ভালো করে দেখো, দেখছ তো তুমি? এই এখানে যেখানে আমি আমার আঙুল রেখেছি।’
জবাবে চর্মকার বলবে, ‘আচ্ছা!লাগিয়ে দিচ্ছি।’
তখন তুমি তাকে বলবে, ‘আমাদের শিক্ষক তোমাকে একটি মোটা, শক্ত চামড়ার পট্টি লাগাতে বলেছেন। আর এমনভাবে ওটা বসাবে যাতে কোনোভাবেই তালিটি বোঝা না যায়।’
জবাবে সে পুনরায় বলবে, ‘হ্যাঁ বুঝেছি। অমনই করে দিচ্ছি।’
তখন তুমি তাকে আবার বলবে, ‘আমাদের শিক্ষক বলেছেন তিনি তোমার অনেক পুরনো কাস্টমার। তাই দয়া করে হিসেবটা বিবেচনায় রাখবে।’
এরপর সে তোমার কাছে যত টাকাই চাক; কোনোভাবেই তাকে এক পিয়াস্টার বেশি দেবে না। সুতরাং এখন যাও আর চোখের পলকে ফিরে এসো। এরপর অবশ্য ছাত্রটি ওখান থেকে প্রস্থানের সাথেসাথেই আমাদের শিক্ষক সমস্ত কিছু ভুলে যেতেন। কিন্তু যখনই ছাত্রটি ফিরে আসত, আমাদের শিক্ষক অসংখ্য বার তার চোখের পলক ফেলত।
সে যাহোক, যদিও অসংখ্যবার এই বৃদ্ধ লোকটি পিটপিট করে তার চোখ বন্ধ করত আর খুলত; কিন্তু আসলে সে কিছুই দেখতে পেত না। অথবা খুব সামান্যই দেখতে পেত। কেননা একটি চোখে ক্ষীণভাবে দেখা ছাড়া সে ছিল পুরোপুরি অন্ধ। ফলে সে কেবল বস্তুর গঠনই উপলব্ধি করতে পারে, তার মাঝে কেনোরূপ পার্থক্য করতে পারে না। তবে এই লোকটি তার এমন ক্ষীন দৃষ্টশক্তি নিয়েও বেশ আনন্দিত ছিল। এমন ভান করত যে, অন্য সবার মতো সেও সবকিছু দেখছে। যদিও এই ভণিতা কোনোভাবেই তাকে বাড়ি থেকে মকতবে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে তার দুই ছাত্রের কাঁধে নির্ভর করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি।

যদিও পরিবারের কাছে সর্বদাই আমাদের শিক্ষকের দাবিদাওয়া ছিল পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেবে বিভিন্ন খাবার,পানীয়, পোষাকাদি আর নগদ টাকাই। সুতরাং তিনি ফায়সালা করে রেখেছেন, যখন আমাদের বন্ধুটি কোরান খতম করবে, সর্বপ্রথম তার পরিবারের কাছে অর্থ প্রদানের দাবি করবে। তারপর একটি নৈশভোজের আয়োজন। পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে একটি আলখাল্লা, জোব্বা, কাফতান, এক জোড়া জুতো, মাগরিবী পাগড়ি,পাগড়ির ওপরে রাখা উন্নত টুপি এবং মিশরীয় সোনার পাউন্ড। এসবের কোনো কিছু কম দিলে সে সন্তুষ্ট হবে না। ওই পরিবারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে এবং তাদের থেকে কিছুই গ্রহণ করবে না। সুতরাং এভাবেই তিনি কিড়ে খেয়ে কঠিন শপথ করেন

দুই ছাত্রসহ এভাবেই তারা তিনজন পরস্পর পাশাপাশি পথ চলত। অন্যান্য পথচারীদের তাদের জন্য পথ করে দিতে কখনও কিছু সমস্যাই হত এতে। তবে সকাল-সন্ধ্যায় শিক্ষকের মকতব ও বাড়িতে যাওয়ার দৃশ্যটি সত্যিই বড় অদ্ভুত ছিল। সে ছিল বেশ গোলগাল স্থুলকায়। এতে উপরে চাপানো তার ওভারকোটটি বিশাল বপুকে আরও বেশি ঢেপসা করে তুলেছিল। আর যেমনটা বলেছি, তিনি তার দুই বাহু দুই সহচরের কাঁধে রাখতেন। তাই যখন তারা তিনজন এক সঙ্গে হেঁটে যেত, তাদের পায়ের নীচে ভূমিতে তখন প্রতিধ্বনি হত। অধিকন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়ের জন্য শিক্ষক তার শিষ্যদের মাঝে সবচেয়ে বুদ্ধিমান ও সুরেলা কণ্ঠের কাউকেই বেছে নিতেন। কেননা তিনি সঙ্গীত ভালোবাসতেন এবং ছাত্রদের এর পাঠ দিতেও পছন্দ করতেন। এমনকি পথেই তিনি তাদের এই বিদ্যে সম্পর্কে বলা শুরু করতেন। তখন তিনি নিজেই গাইতেন এবং তার সঙ্গীরাও তার সঙ্গে গাওয়া শুরু করত অথবা নিশ্চুপ তাকে শুনে যেত। কখনও আবার শিষ্যদের কোনো একজনকে তিনি গাওয়ার নির্দেশ দিলে, তিনি নিজে ও অপর শিষ্য মিলে গায়কের সঙ্গে গুনগুন করে গাইতেন।
আমাদের শিক্ষক শুধু কেবল তার কণ্ঠ ও জিহ্বা দিয়েই গাইতেন না। বরং এসবের সাথে তিনি তার মাথা ও শরীরও ব্যবহার করতেন। তখন প্রায়শই তিনি তার মাথা উপর-নীচ ও ডান-বামে আন্দোলিত করেন। এমনকি আমাদের শিক্ষক আঙুল দিয়েও সঙ্গীত গাইতেন। তখন তিনি গুনগুন করে তার দুই সহচরের পেটের নীচে আঙুল দিয়ে টোকা দেন। কখনও আবার কোনো সঙ্গীত যখন তার নিজের কাছে প্রীতিকর লাগে; আর তার মনে হয় হাঁটতে হাঁটতে ঠিকঠাক এর রসাস্বাদ করা যাচ্ছে না! তখন তিনি দাঁড়িয়ে যেতেন এবং গান শেষ করে পুনরায় পথ চলতেন। তবে এরমাঝে গুরুতর বিষয়টি ছিল, আমাদের শিক্ষক ভাবতেন তার কণ্ঠ বুঝি অপূর্ব। কিন্তু হায়! তিনি এটা বুঝতে পারেননি, সৃষ্টিকর্তা তার মত অমন কুৎসিত দ্বিতীয় আরেকটি কণ্ঠ সৃষ্টি করেননি।
ফলে যখনই আমাদের বন্ধুটি কুরানের এই আয়াত তেলাওয়াত করত : (ইন্না আনকারাল আসওয়াতি লা-সাওতুল হামির: তথা, প্রকৃত সবচেয়ে অপ্রীতিকর শব্দ হলো গাধার আওয়াজ)। তখন অপরিবর্তনীয়ভাবে সে আমাদের শিক্ষকের কথা ভাবত। অন্যদিকে যখনই আমাদের শিক্ষক মসজিদে যোহরের নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে অথবা মকতব থেকে বাড়ি ফেরার পথে বুরদার কবিতা আবৃত্তি করতেন; তখনও বন্ধুটির ওই একই কথা মনে হত।
যেমনটা পূর্বে উল্লেখ করেছি যে, আমাদের বন্ধুটি মকতবে নিজেকে মাটির ওপর বসে আছি বলে মনে করে। সেখানে তার চারপাশে অসংখ্য জুতো ছড়ানো। যেগুলোর সাথে সে খেলা করে। আমাদের শিক্ষক তখন সুরা আর-রহমান পড়ছিলেন। কিন্তু সে ঠিক স্মরণ করতে পারে না যে, তিনি কি তা প্রথমবার পাঠ করছেন নাকি দ্বিতীয়বার!
এভাবে অন্য একদিন সে নিজেকে মাটিতে ও অসংখ্য জুতোর মাঝে নয়; বরং আমাদের শিক্ষকের ডান পাশে অন্য একটি বেদির ওপর বসা দেখতে পায়। শিক্ষক তখন পড়ছিলেন: (আতাঅ্মুরুন্নাসা বিল্ বিররি ওয়াতানসাওনা আনফুসাকুম ওয়া আনতুম তাতলুনাল কিতাব আ-ফালা তা’কীলুন: অর্থাৎ, তবে কি তোমরা লোকদেরকে সৎকার্যে আদেশ করেছো এবং তোমাদের নিজেদের ভুলে যাচ্ছ- অথচ তোমরা গ্রন্থ পাঠ কর; তবে কি তোমরা হৃদয়াঙ্গম করছো না?) তার সর্বোচ্চ ধারণা সেদিন একবার সে পুরো কোরান শেষ করে দ্বিতীয়বার তা পাঠ করেছিলেন।
এটা আশ্চর্যের নয় যে, আমাদের বন্ধুটি কীভাবে কুরআন মুখস্থ করেছিল- সে কথা ভুলে গেছে। মূলত নয় বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই কোরান হিফয সমাপ্ত করেছিল সে। সেদিনের কথা তার স্পষ্ট মনে আছে, যেদিন সে কুরআন খতম করেছে। এমনকি তা শেষ করার কয়েকদিন আগে শিক্ষক তাকে বলেছিল, তার পিতা তার এমন অর্জনে কী আনন্দিতই না হবে! আর তিনিও কীভাবে এ জন্য তার ন্যায্য পাওনা ও বকেয়াগুলো দাবি করবেন। কেননা এর আগে কী সে তার অন্য চার ভাইকেও পড়ায়নি? যাদের একজন আল আজহারে গিয়েছে, অন্যরা বিভিন্ন মাদরাসায় পড়ছে। আর আমাদের এ বন্ধুটি হলো তার পাঁচ নম্বর ছাত্র। তাহলে এ পরিবারের ওপর আমাদের শিক্ষকের কী অসংখ্য দাবিদাওয়া থাকতে পারে না?
যদিও পরিবারের কাছে সর্বদাই আমাদের শিক্ষকের দাবিদাওয়া ছিল পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেবে বিভিন্ন খাবার, পানীয়, পোষাকাদি আর নগদ টাকাই। সুতরাং তিনি ফায়সালা করে রেখেছেন, যখন আমাদের বন্ধুটি কোরান খতম করবে, সর্বপ্রথম তার পরিবারের কাছে অর্থ প্রদানের দাবি করবে। তারপর একটি নৈশভোজের আয়োজন। পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে একটি আলখাল্লা, জোব্বা, কাফতান, এক জোড়া জুতো, মাগরিবী পাগড়ি, পাগড়ির ওপরে রাখা উন্নত টুপি এবং মিশরীয় সোনার পাউন্ড। এসবের কোনো কিছু কম দিলে সে সন্তুষ্ট হবে না। ওই পরিবারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে এবং তাদের থেকে কিছুই গ্রহণ করবে না। সুতরাং এভাবেই তিনি কিড়ে খেয়ে কঠিন শপথ করেন।

সেদিন ছিল বুধবার। সকালে আমাদের শিক্ষক ঘোষণা করেন যে, আজ আমাদের বন্ধুটি কোরান খতম করবে। এরপর তারা আসরের পূর্বেই মকতব থেকে বেরোয়। শিক্ষক তার দুই সহচরের ওপর ভর দিয়ে হাঁটেন। আমাদের বন্ধুটি তার পেছনে। আর তার সামনে গ্রামের এক অনাথ ছেলে তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যায়। অবশেষে তারা বাড়িতে পৌঁছে এবং আমাদের শিক্ষক মৃদু ধাক্কায় দরজা খোলেন। তারপর তার চিরাচরিত অভ্যেস অনুযায়ী ‘ইয়া সাত্তার’ বলে তিনি অতিথি কক্ষে প্রবেশ করেন। যেখানে শায়খ তথা আমাদের বন্ধুর বাবা বসেছিলেন। মাত্রই আসরের নামাজ শেষ করে তিনি তার প্রাত্যহিক আমলে মশগুল হয়েছেন। তিনি তাদের মৃদু হেসে দৃঢ়চিত্তে অভিবাদন জানান। তার কণ্ঠ ছিল কোমল ও শান্ত আর আমাদের শিক্ষকের গলা ছিল উঁচু ও কর্কষ। ইতোমধ্যে আমাদের বন্ধুটি কিছু না বললেও অনাথ ছেলেটি ছিল যারপরনাই উৎফুল্ল।
শায়খ তখন আমাদের শিক্ষক ও সঙ্গের অনাথ ছেলেটিকে বসতে দেন। ছেলেটাকে একটি রূপার টুকরো উপহার দিয়ে সেবককে নির্দেশ দেন, ‘একে খেতে নিয়ে যাও।’ তারপর তিনি তার ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, ‘আল্লাহ তোমার জন্য তার পথ উন্মুক্ত করুন। যাও মা-কে গিয়ে বলো, ‘উস্তায এসেছেন।’
তার মা অবশ্য ইত্যবসরে আমাদের শিক্ষকের কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছেন এবং ইতোমধ্যেই এমন একটি উপলক্ষের জন্য প্রয়োজনীয় আহারাদি প্রস্তুত করে রেখেছেন। তাতে ছিল বেশ বড় ও চওড়া একটি জগে চিনির শরবত। যা আমাদের শিক্ষকের কাছে আনা হলে, তিনি তা নিমিষেই গলধকরন করেন। তার দুই সঙ্গীও তখন দা’গ্লাস শরবত পান করে। এরপর ‘গাহওয়া’ আনা হলে আমাদের শিক্ষক-শায়খ এর সঙ্গে তা পান করেন এবং শায়খকে তার ছেলের কোরান পরীক্ষা নেওয়ার জন্য জোরাজোরি শুরু করেন। কিন্তু জবাবে শায়খ বলেন, ‘অত তাড়া কি! ওকে খেলাধুলা করতে দিন। এখনও ও খুব ছোট।’ অতঃপর আমাদের শিক্ষক যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ান। তখন শায়খ বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ মাগরিবের নামাজ আমরা একসঙ্গেই আদায় করব।’ ফলত স্পষ্টই তা নৈশভোজের দাওয়াত ছিল।
তবে আমি ঠিক মনে করতে পারি না, আমাদের শিক্ষক সেদিন আমাদের বন্ধুটির কোরান হিফয সমাপ্ত করা উপলক্ষে আর কোনো উপহার বা উপঢৌকন পেয়েছিলেন কি-না! কেননা কুড়ি বছর ধরে সে এই পরিবারকে চেনে এবং তার ও পরিবারের মাঝে খরচাদির বিষয়টিও তার ভালোই জানা। আসলে, প্রকৃতপক্ষে তিনি এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, এবার যদিও এই পরিবারের কাছ থেকে তেমন কোনো সৌভাগ্য অর্জন হয়নি। তাই বলে অন্য কোনো সময়েও সে এমন দুর্ভাগা হবে না।

*পিয়াস্টার : মধ্যপ্রাচ্যে প্রচলিত মুদ্রার একক।
*গাহওয়া : আরববিশ্ব, বিশেষত সৌদি আরবে গাহওয়া হলো প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী একপ্রকার পানীয়। চা-কফির মতোই যা পান করা হয়। যদিও এর স্বাদ চা-কফি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

আরো পড়তে পারেন

একাত্তরের গণহত্যা প্রতিহত করা কি সম্ভব ছিল?

২৫ মার্চ কালরাতে বাঙালি জাতির স্বাধিকারের দাবিকে চিরতরে মুছে দিতে পাকিস্তানি নরঘাতকেরা যে নৃশংস হত্যাকান্ড চালিয়েছিল, তা বিশ্ব ইতিহাসে চিরকাল কলঙ্কময় অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। ওই এক রাতেই শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই ৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়। গ্রেফতার করা হয় প্রায় তিন হাজার। এর আগে ওই দিন সন্ধ্যায়, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা একতরফাভাবে….

ভাষা আন্দোলনে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা

আগের পর্বে পড়ুন— চূড়ান্ত পর্যায় (১৯৫৩-১৯৫৬ সাল) ভাষা আন্দোলন পাকিস্তানের সাম্রাজ্যবাদী আচরণের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ ও একটি সার্থক গণআন্দোলন। এই গণআন্দোলনের মূল চেতনা বাঙালী জাতীয়তাবাদ। জাতীয়তাবাদ হলো দেশপ্রেম থেকে জাত সেই অনুভূতি, যার একটি রাজনৈতিক প্রকাশ রয়েছে। আর, বাঙালি জাতিসত্তাবোধের প্রথম রাজনৈতিক প্রকাশ বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের ফলে দুই হাজার মাইল দূরত্বের….

চূড়ান্ত পর্যায় (১৯৫৩-১৯৫৬ সাল)

আগের পর্বে পড়ুন— বায়ান্নর ঘটনা প্রবাহ একুশের আবেগ সংহত থাকে ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দেও। সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আতাউর রহমান খান এক বিবৃতিতে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেন। আওয়ামি লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমানও ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানান। ১৮ ফেব্রুয়ারি সংগ্রাম কমিটির সদস্য যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র….

error: Content is protected !!