Author Picture

শাহাজাদা বসুনিয়ার একগুচ্ছ কবিতা

শাহাজাদা বসুনিয়া

এবড়োখেবড়ো- ৬১
.
তুমি যদি শরৎকালে আমার জীবনে আসতে
আমি গ্রীষ্মকে তাড়িয়ে দিতাম হাসিমুখে
যদি তোমাকে এক বছর কাছে পেতাম
আমি মাসগুলোকে ঘুরিয়ে দিতাম
যদি শতশত বিলম্ব হতো
আমি আমার হাতে তাদের গণনা করতাম
যদি নিশ্চিত হতাম এ জীবন শেষ হয়ে গিয়েছিল
তাহলে জীবনকে একটি ছিদ্রের মতো ফেলে দিতাম
অতঃপর অনন্তকালের স্বাদ গ্রহণ করতাম
এখন সময়ের অনিশ্চিত ডানার দৈর্ঘ সম্পর্কে
আমি অজ্ঞ, শুধুই আমাকে গবলিন মৌমাছির মতো
তাড়িত করে অনিশ্চিয়তায়। সময় বড় নির্দয়।

এবড়োখেবড়ো- ৬২

যোগাযোগের অনুমতি ছিল অবিরাম
ঘন্টা অতি দ্রুত স্খলিত, ঘন্টা হবে
লোভী হাতে আঁটসাঁট করা
দুটি ডেকের মুখগুলি পেছনে ফিরে তাকায়
বিপরীত জমিতে-সীমানায় আবদ্ধ
সূর্য হিসাব মতো বিদেশে চলে গেল
যেন কোন আত্মা অয়নকাল অতিক্রম করেনি
বক্তৃতা দ্বারা অপবিত্র ছিল দুর্লভ
প্রতিটি গীর্জা-মন্দির-মসজিদ সিল করা
সময় উন্মুক্ত, যোগাযোগের অনুমতি ছিল
আমার জন্য একটি গ্রীষ্মের দিন উন্মুক্ত ছিল
সংগে ছিল খুব বিশ্রী শো ও নৈশভোজ।

এবড়োখেবড়ো-৬৩

তুমি আমাকে রেখে গেলে দিশাহীন নিশানে,
রেখে গেলে দুটি মধুর উত্তরাধিকারী
তুমি আমাকে রেখে গেলে বেদনার সীমান্তে
যা সমুদ্রের মতো বিশাল-অনন্তকাল।
এবং সময়ের মধ্যে তোমার চেতনা ও আমি
পরিবর্তন ও আমার মন নড়বড়ে
জীবন যখন প্রশ্ন করে তার মহিমা পরিপূর্ণ কিনা
তখন সময়ের মধ্যে দুটি মধুর উত্তরাধিকার
তোমার চেতনা ও আমার অতীন্দ্রিয় জেগে থাকা।

এবড়োখেবড়ো-৬৪

আমি সর্বদা ভালোবাসবো-ভালোবাসা
সেই প্রেমই আমার পূর্ণ জীবন,
এবং এখানে জীবনের অমরত্ব রয়েছে
তোমার বুকের মধ্যে আমাকে লুকিয়ে রাখো
আমিও তোমাকে নিজের বুকে লুকিয়ে রাখি
অতঃপর আমরা সন্দেহহীন
আর বাকীটা ফেরেস্তারা জানেন
আমি যে সর্বদা ভালোবাসতাম
আমি প্রমাণ এনেছি তোমার মতোই সন্দেহাতীত
আমরা দুজনই এখনও একাকীত্ব অনুভব করি।

আরো পড়তে পারেন

গাজী গিয়াস উদ্দিনের একগুচ্ছ কবিতা

বীভৎস খেলা নগরে বাতাসে মথিত জনস্রোতের কোলাহলে শুনতে পেয়েছি সারিগান গঞ্জের হাটে আকাঙ্খার গভীরে মন্দ্রিত অভিন্ন প্রাণ নীরব দর্শক ছিলাম ব্যর্থতার করুণ গান ফেরার মহড়ায় বঞ্চিত কুঁড়েঘরে সরাইখানার- শুঁড়িখানার মাছিরাও নেশায় বুদ্বুদ প্রকম্পিত কান্নার পর একদিন হাসির তিলকরেখা বিচ্ছুরিত শৈশবের ক্ষুধার্ত চিৎকার ক্রর হাসি চেপে মৃত্যু পরোয়ানা ঝুলে ভাগ্য প্রহসনে যুদ্ধের ব্যগ্র দামামা থেমে গেলো-….

তোফায়েল তফাজ্জলের একগুচ্ছ কবিতা

উপায় অবলম্বন কাঁটা থেকে,  সুচালো কাঁকর থেকে পা রাখিও দূরে, জায়গা না পাক চলন-বাঁকা চেতনায় উড়ে এসে বসতে জুড়ে; এসবে খরগোশ কানে থাকবে রাতে, পড়ন্ত বেলায়, দ্বিপ্রহরে, পূর্বাহ্নে বা কাক ডাকা ভোরে। দুর্গন্ধ ছড়ানো  মুখ ও পায়ের তৎপরতা থেকে গ্রীষ্ম থেকে সমস্ত ঋতুতে একে একে নেবে মুখটা ফিরিয়ে তিলার্ধকালও না জিরিয়ে। কেননা, এদের চরিত্রের শাখা-প্রশাখায়….

আহমেদ ফরিদের একগুচ্ছ কবিতা

তোমার সাথে দেখা হওয়া জরুরী নয় সেদিন তুমি আমাকের ডেকে বললে, ”আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরছে এসো চা খেয়ে যাও ঝাল মুড়ি, পেঁয়াজ ভেজে দেবো সঙ্গে কাঁচালংকাও থাকবে। দুজনে চা খাব, মুড়ি খাব, আর গল্প করবো।’ আমি বললাম, ’না, আমি যাবো না । আমি আমার জানালায় বসে আকাশ দেখছি, বৃষ্টি দেখছি, আকাশের কান্না দেখছি, গাছেদের নুয়ে….

error: Content is protected !!