যোগসূত্র
.
টাই বাঁধার সময় পোষা কুকুরের গলার বেল্ট
মনে পড়ে
যৌন সংগমের সময় সারি সারি কাটাগাছ
দাঁড়িয়ে থাকে দরজার বাইরে
প্রবল বৃষ্টির ভেতর থেকে পোলাওয়ের
ঘ্রাণ ভেসে আসে
সুগন্ধি সাবানের ফেনা থেকে জন্ম নেয়
অসংখ্য শাদা প্রজাপতি।
কেন যে এমন হয় !
কী যোগসূত্র আছে এদের ভেতর
আমি জানবো না…
ওই যে লোকটা আগুন ঝরাচ্ছে বক্তৃতায়
সে আসলে ভাঙা মানুষ
বউয়ের শক্ত চোয়ালের নিচে
তার মিনমিনে গলা শোনা যায়
রাতে তার ভালো ঘুম হয় না।
কেন ? কেন ? কেন ?
আমি আরও জানবো না কী দুঃখে জবাফুল
ভেসে যায় হরিপুরে, মহানন্দায় !
ভাঙা ডাল, আয়নার কবিতা
.
বনপথে কুড়িয়ে পেলাম ফুলভরা ভাঙা ডাল
জংগল তালা দিয়ে রাখে অনেক রহস্য
তবু কোথাও কোথাও রাখে না আড়াল
সেই তালা খুলি আমি জংগলের চাবি দিয়ে
তখন আগাছাজড়ানো এক আয়না তাকিয়ে
থাকে আমার চোখের দিকে
আয়নায় মুখ দেখে মন খারাপ হয়
আগাছাজড়ানো ওই আয়না নিজেকে দ্যাখে
অন্য এক আয়নায়; এও আরেক বিস্ময়।
এই জীবন
.
তোমারও বয়স হলো অবশেষে !
ভাবিনি কখনো তোমার বয়স হবে
সংসারের ভাটির টানে তুমিও ভেসে যাবে
নাতিপুতিদের নিয়ে, ভাবলেশহীন !
আমি ভাবি, কেন স্বপ্নের ভেতর
ভাসতে থাকে না
তোমার তেইশ বছরের সজীবতা ?
তুমিও ধূসর হলে অবশেষে !
ছাদে আমপাতার ছায়ায় বসে তোমার
পেলব আঙুল নাড়াচাড়া করছি ভালোবেসে !
অভাবনীয়
.
প্রিয় তোমাদের আরও বেশি মনে রাখার জন্য
দূরে চলে যাই
আমার সাথে সাথে যায় একটা বড় তারা
যাকে আমি অশেষ সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে
ছুটে যেতে দেখেছি সন্ধ্যায় !
প্রিয় তোমাদের কিছুটা ভুলে থাকার জন্য
নিরাপদ দূরত্বে বাসা ভাড়া নিই, আমার সাথে
থাকে এক বহুদর্শী দাঁড়কাক যাকে আমি স্বপ্নে
রক্তবমি করতে দেখেছি বন্ধ স্টুডিওর ভেতর !
আরণ্যক
.
পাখির গান আর পাহাড়পানির শব্দ ছাড়া
অন্য যা কিছু শব্দময় আমাকে ক্লান্ত করে দ্রুত
যার ফলে আমি আরও বেশি করে
ঘন সবুজের দিকে এগোই
আরও বেশি করে খুঁজি নৈঃশব্দের ঐকতান ;
ঘন সবুজ বসতির দিকে চাপচাপ বাড়িঘর
তারও কোনও শব্দ নেই
জংগলের সাড়া নেই
আছে শুধু গাঢ় রঙ, নিম্নমুখি অভিমান।