Author Picture

আলোকচিত্রের ব্যাকগ্রাউন্ড (এক)

সুদীপ্ত সালাম

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ইও জিমা যুদ্ধটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। জাপানের ইও জিমা দ্বীপে জাপানি ও মার্কিন সেনাদের মধ্যে যুদ্ধটি চলে ১৯৪৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত। এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর প্রায় ৭ সাত হাজার এবং জাপানি বাহিনীর ১৮ হাজারেও বেশি সেনা নিহত হয়।
যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগেই ২৩ ফেব্রুয়ারি, দ্বীপের সুরিবাচি পাহাড়ের ৫৫৪ ফুট উঁচু চূড়ায় ছয় মার্কিন মেরিন সেনা সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পতাকা উত্তোলনের প্রাণপণ চেষ্টার মুহূর্তটি ক্যামেরাবন্দি করেন তখনকার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের ফটোসাংবাদিক জো রোজেনথাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম প্রধান ছবি হিসেবে স্বীকৃতি পায় এই আলোকচিত্রকর্ম। ঐতিহাসিক ছবিটির জন্য ১৯৪৫ সালেই রোজেনথালকে পুলিৎজার পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। কিন্তু তখনও এই ছবি ও ছবির কারিগরের জন্য এর চেয়ে বড় সম্মান অপেক্ষা করছিল।


১৯৫৪ সালের ১০ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয় রোজেনথালের সেই ছবি অবলম্বনে নির্মিত ভাস্কর্য ‘মেরিন কর্পস ওয়ার মেমোরিয়াল’। ৭৮ ফুট উচ্চতার এই ভাস্কর্যটি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে স্থাপন করা হয়। এক সময় এটিই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ব্রোঞ্জের তৈরি ভাস্কর্য। ১৭৭৫ সন থেকে দেশের জন্য শহীদ হওয়া সকল মার্কিন মেরিন সেনার স্মৃতির উদ্দেশ্যে ভাস্কর্যটি উৎসর্গ করা হয়েছে। পুরো কমপ্লেক্সটি সাড়ে ৭ একর জমির উপর স্থাপিত।
আরেকটি তথ্য, যার ছবি নিয়ে সশস্ত্র বাহিনী এতো উচ্ছ্বসিত, সেই সশস্ত্র বাহিনীতেই যোগ দেয়ার ইচ্ছে ছিল আলোকচিত্রী রোজেনথালের। কিন্তু দুর্বল দৃষ্টিশক্তির কারণে তাকে নেয়া হয়নি। তবে তিনি তার ছবি দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন অনেকের চেয়ে তার দৃষ্টিশক্তি প্রখর।

আরো পড়তে পারেন

মৃত্যুতেও থামেনি সমালোচনা

জাতিসংঘের একটি ফুড ক্যাম্পের পাশে একটি অসুস্থ শিশু পড়েছিল। শিশুটির ঠিক পেছনেই একটি শকুন অপেক্ষা করছে, কখন শিশুটি মরবে, কখন সে পাবে মাংসের স্বাদ! কি নিদারুণ দৃশ্য! এই ছবির সমমানের কোনো ছবি পৃথিবীতে আছে কিনা সন্দেহ। ১৯৯৩ সনে ছবিটি তুলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান ফটোসাংবাদিক কেভিন কার্টার। একই বছরের ২৬ মার্চ ছবিটি দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে ছাপা হয়।….

আজও শরণার্থী ‘আফগান গার্ল’

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনের আলোকচিত্রী স্টিভ ম্যাককারি ১৯৮৪ সনে পাকিস্তানের পেশোয়ারের কাছাকাছি এক শরণার্থী শিবির থেকে কিশোরী শরবত গুলার ছবি তোলেন। পরের বছর ছবিটি ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ হওয়ার পরপরই আলোচনার শীর্ষে উঠে আসে এই কিশোরী। আর ছবিটি ওয়ে ওঠে বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত পোরট্রেটগুলোর একটি। গুলার পাথরের মতো চোখ দুটি ছিল বিস্ময়কর। সবুজ চোখে একই সঙ্গে ভয় ও….

টেসলার অপছন্দের ছবি

তার নামে যুক্তরাষ্ট্রে ১১২টি এবং অন্য ২৬টি দেশে আরো ১৯৬টি প্যাটেন্ট নিবন্ধিত আছে, এর মধ্যে ৩০টি শুধু ফ্রান্সেই নিবন্ধিত—এ থেকে অনুমান করা যায় নিকোলা টেসলা কত বড় মাপের বিজ্ঞানী ছিলেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর আশির দশক থেকে এই সার্বীয়-মার্কিন ইলেক্ট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার একের পর এক যুগান্তকারী আবিষ্কার দিয়ে মানবসভ্যতাকে সমৃদ্ধ করা শুরু করেন। বিদ্যুৎ ছাড়াও মোটর,….

error: Content is protected !!